সহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা শহরের প্রানকেন্দ্রে একটি সুপরিসর নগর উদ্যান। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষন থেকে শুরু করে এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ন রাজনৈতিক ইতিহাস।
উপযুক্ত পরিবেশ, নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঐতিহাসিক এ স্থানের মর্যাদা রক্ষা না করে বিশ্ববিদ্যালয় এটা কি ধরনের সিদ্ধন্ত নিল। এ যেন গাছের গোড়া কেটে আগায় পনি দেওয়া।
ভাষা অন্দোলনের পটভূমিতে রচিত মাহবুব উল আমল চৌধুরী “কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি” কবিতায় লাইনটি না বলে পারছিনা-“বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রঙ্গনে আমি তাদের ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।” কিন্তু কথা হচ্ছে, উন্মুক্ত প্রঙ্গনই যদি না থাকে দাবি নিয়ে যাবো কোথায়।
সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী অবস্থান করলে ও কোনো ধরনের সমস্যায় পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের দায়দায়িত্ব গ্রহণ করবে না।
এখানে সময় কোন বিবেচ্য বিষয় না। দিনে হোক আর রাতেই হোক। শিক্ষার্থী হোক আর না হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে একটি উদ্যানে জনসাধারনের নিরাপত্তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়েরই দায়িত্ব। ঢাকা শহরের যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে দিন শেষে খোলা আকাশের নিচে একটু গল্প, আড্ডা, বিশ্রামের জন্য উদ্যানে জড়ো হয় অনেকেই। হাটাহাটি বা শরীর চর্চার জন্য অনেকেই কাজ শেষে সন্ধার পরে উদ্যানে আসেন।
তাছাড়া ঐ উদ্যান শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীদের জন্য সংরক্ষিত নয়। তাহলে বহিরাগতদের নিরাপত্তা কে দিবে? শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়লে তার দায় নিবেনা বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু শিক্ষার্থীরা সমস্যা সৃষ্টি করলে তায় দায়ও কি তারা নিবেনা? অপরাধ প্রবনতা বাড়ছে তাই পুলিশ উদ্বিগ্ন। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের করনে অপরাধ কমবে না বরং আরো বাড়বে। প্রশাসন কোন দায়দায়িত্ব না নিলে অপরাধিরা আরো বেশি করে সুযোগ পাবে।
অন্ত্যত রাত ১০টা পয্যন্ত কি করা যেতনা? যেটি হয়েছে, তা পরোক্ষভাবে সবার জন্য সন্ধার পর উদ্যানে প্রবেশ নিষেধ করাটাই বুঝায়।
এখানে শিখা চিরন্তন, স্বাধিনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনাত যাদুঘর স্থাপিত হয়েছে। কিন্তুনিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ পুশিল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন। সরকার যেখানে সিসি ক্যামেরার মধ্যমে পুরো ঢাকা শহরে নিরাপদে পথ চলবার পরিবেশ তৈরী করার চেষ্টা করছে সেখানে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ন এ উদ্যানের নিরাপত্তা কেন দিতে পারছেনা কতৃপক্ষ।
রাতের বেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। মজার ব্যবার হচ্ছে দিনে দুপুরে হাজার হাজার মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সমাধানও তারা দিতে পারেনি। আসল কথা হচ্ছে স্বদিচ্ছা।
পহেলা বৈশাখে নারী কেলেংকারী, অভিজিত হত্যার মত ঘটনার পর প্রশাসন তাদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। কিন্তু দায়িত্ব পালন না করে তা এড়িয়ে যাওয়া বা দায়িত্বহীনতা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া য়ায়না।
মুক্ত চলাফেরাকে সংকৃর্ন করার জন্য সূর্যাস্ত বা সান্ধ আইনের মতই বলাযায় এটি।
কিন্তু দু:খের বিষয় এইযে, এতে শিক্ষার্থীদের কিছুই আসে যায়না। কারন পুজিবাদি কর্পোরেট কালচার এ পড়াশোনা করে চাকুরী পাওয়াটাকেই শিক্ষার্থীদের জীবনের বড় লক্ষ বা উদ্দেশ্য। খেলাধুলা, বিনোদন সংস্কৃতি চর্চাসহ সৃজনশীল মাধ্যমে বিচরন করা তাদের জন্য নিতান্যই অপ্রয়োজনীয়। উদ্যান বা পার্কের যাথাযথ ব্যবহার তারা জানেনা। আর তাই প্রতিবাদও করতে হয়না।