মস্কোর দমোদাদোবো বিমান বন্দরে সকাল থেকে রাত পর্য়্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মোস্কিকো থেকে আসা যুবকদয় চালিয়ে নেওয়ারমত ইংরেজি বলতে পারে। তারা কফি খাওয়ার প্রস্তাব দিল। বেশ কিছুক্ষণ সময়ধরে কফি খেলাম আর একে অন্যকে জানলাম কথ হল দুই দেশের রাজনীতি অর্থনীতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে। মস্কো শহর দেখতে যাওয়া নিয়ে তাদের পরিকল্পনায় কথা জানার পর আর দেরি করিনি। কিছুক্ষন গবেষণা করে বের করলাম এয়ারপোর্ট থেকে বেরহয়ে ঘুরতে যাওয়ার উপায়। বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করল উৎসব আয়াজকদের তথ্য সহায়তা কর্মীরা। মেক্সিকোর একজন কিছুটা রাশিয়ান ভাষা বলতে পারে। কিন্তু বুঝতে পারেনা। মস্কোতে এসে প্রথমে বড় রকমের একটা ধাক্কা খেলাম। বিমান থেকে নামার পর ভাষা বুঝতে সমস্যার কারনে আমাদের লাগেজ প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিল। ১ ঘন্টা খাটাখাটনি করে বুঝাতে সক্ষম হলাম তারপর ব্যাগ বুজে পেলাম।
সুপরিকল্পিতভাবে বেরিয়ে পড়লাম। পথমে পাবলিক যানবাহনের বিড়ম্বনা এড়াতে টেক্সি করে বের হলাম। খরচ একটু বেশি হলেও ভালো হয়েছে। একটু বৃষ্টি আর বাতাসে শীতটা বেশিই পড়ছে। রাস্তায় বেরিয়ে প্রথম চোখে পড়ল যানবাহন। এখানে মাত্র তিনধরনের যান বাহন- বাস, ট্রেন ও টেক্সি। পুরো শহরে কোন ধরনের রিক্সা, বেবীটেক্সি বা লেগুনা নেই। রাস্তাঘাট খুবই গোছালো, পরিস্কার। নাগরিকরা নিয়ম শৃঙ্খলার বিষয়ে শতভাগ শতর্ক। রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম ও ট্রাফিক পুলিশ, দুটোর কোনটিই নেই। সিগনাল বাতি জললেই গাড়ি থেমে যায়। আমোদের মতো একটু পরপর রাস্তার পাশে মার্কেট নেই। যেতে যেতে কিছু ছবি তুলার সুযোগ পেলাম। পানির পিপাসা লাগলে দোকানে গিয়ে অবাক হলাম। ৫০০ মিলি গ্রাম পানির মূল্য ২০০ রুবল (রাশিয়ান মূদ্রা)। বাংলাদেশি টাকায় ৩০০টাকার উপরে। পানির পরিবর্তে কিনলাম কোমল পানীয়। কারণ দাম পানির চেয়ে কম। রেড স্কয়ার ঘুরা শেষ করে আসার পথে দু’জন দুদিকে যাব। দু’জনই সচিতে যাব কিন্তু দুই আলাদা বিমান বন্দর থেকে। মস্কো শহরের তিন কোনায় ৩টি বিমান বন্দর আছে। সবগুলোই শহরের বাইরের দিকে।
এখানে সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী যান হল মেট্টো এক্সপ্রেস কিছুটা মাটির নিচে, কিছুটা রাস্তায়, কিছুটা রাস্তার উপর দিয়ে চলে। বেশ দ্রুত যান। প্রতি স্টেশনে মাত্র ১মিনিট বিরতি। মেক্সিকোর বন্ধু বুঝিয়ে দিয়েছে, নয়টি স্টেশন পেরিয়ে দশমটাতে নামতে হবে। মোবাইলে থাকা মানচিত্র এবং নামের সাথে মিলিয়ে নেমে পড়লাম। একটা বিষয় নজরে পড়লো। এখানো সবগুলো মানব ক্রসিং রাস্তার নিচে অর্থাৎ আন্ডারপাস। একজন পথচারিকে অনেক কষ্টে বুঝাতে পারলাম আমি দমোদেদোবো বিমান বন্দরে যাব। জানতে চাইলাম ৩০৮ নম্বর বাসটি কোথা থেকে ছাড়ে।
যথাযথভাবে বাসে উঠে সামনের দিক বসলাম। একজন নারী উঠারপর আমি সিট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাসে কোন নারীপুরুষ বা কোটার ব্যবস্তা নেই। তাই সবাই সমান। এভাবেই মস্কোর একদিন টেকে গেল। তারপর আরো কিছুক্ষন সচির ফ্লাইটের অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়ে লিখাটিও সম্পন্ন হল।
১৪.১০.২০১৭